কালের কণ্ঠের সাংবাদিককে জেলে ভরার হুমকি বাউফল উপজেলার ইউএনওর


নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুর ইসলাম

২০ মে ২০২৫ ইং
রাসেল মোল্য



রাসেল মোল্লা:



কালের কণ্ঠের পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি এমরান হাসান সোহেলকে জেলে ভরে শাস্তির হুমকি দিয়েছেন বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম। আজ সোমবার বাউফল গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে বসে তিনি এ হুমকি দেন।


এ সময় ইউএনও বলেন, ‘আমি কারো ফোন ধরায় বাধ্য নই। আমাকে চিঠি দিতে হবে।


আমরা প্রজাতন্ত্রের এমন চাকর যে মালিককে জেলে ভরে শাস্তি দিতে পারি।’

ইউএনওকে আমন্ত্রণ জানাতে তার বাংলোতে যেতে হবে উল্লেখ করে আমিনুল এ-ও বলেন, ‘আমার বাংলো একটা অফিস। বাংলোতে যখন অ্যালাউ করব তখন ঢুকবেন।’


ইউএনওর এমন বক্তব্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সবাই বিস্মিত হন।



তারা এই আচরণকে ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন।

জানা গেছে, সোমবার ওই বিদ্যালয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন পটুয়াখালী জেলা কার্যালয় ও বাউফল দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটির আয়োজন ও বাস্তবায়নে স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ডের দিনক্ষণ ছিল।


এমরান হাসান সোহেল বাউফল দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্বে আছেন। তিনি জানান, এ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাতে বৃহস্পতিবার ইউএনও কার্যালয়ে যান।


কিন্তু ইউএনও ওই সময় অফিসে ছিলেন না। এরপর শনি ও রবিবার একইভাবে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য গেলেও কার্যালয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। 

ওই তিন দিনই বাউফল দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এমরান হাসান সোহেল ইউএনওকে মোবাইল ফোনে কল দেন। তবে ইউএনও আমিনুল কল রিসিভ করেননি। সর্বশেষ রবিবার সন্ধ্যার পর তাকে কল দিলে তিনি কেটে দেন।


এদিকে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহানারা বেগম ইউএনও আমিনুলকে আমন্ত্রণ জানালে তিনি সোমবার অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। ইউএনও সোমবার দুপুর ১২টার দিকে বিতর্ক প্রতিযোগিতার শেষ পর্বের দিকে ওই বিদ্যালয়ে যান। এ সময় তাকে আমন্ত্রণ না দেওয়ার কৈফিয়তের জন্য দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতিকে প্রশ্ন করেন। এর জবাবে এমরান হাসান সোহেল বলেন, ‘আপনাকে একাধিকবার কার্যালয়ে গিয়ে পাইনি। এমনকি, আপনাকে তিন দিন বিভিন্ন সময় ফোন করেছি, আপনি রিসিভ করেননি।’ তার এ কথায় উত্তেজিত হয়ে পড়েন ইউএনও আমিনুল।


এ সময় ইউএনও বলেন, ‘আপনারা একটা অ্যারেজমন্ট (আয়োজন) করতেছেন ইউএনও জানে না, আপনারা কিসের অ্যারেজমেন্ট করতেছেন, আশ্চর্য ব্যাপার! ইউএনওকে অবহিত না করে আপনাকে এ আয়োজন করার এখতিয়ার কে দিয়েছে।’


এ সময় সোহেল বলেন, ‘আপনাকে আমন্ত্রণের জন্য আপনার কমপ্লেক্সে তিন দিন যাওয়া হয়েছে। কিন্তু আপনাকে পাইনি।’


জবাবে ইউএনও বলেন, ‘উপজেলা কমপ্লেক্সে কে গেছে? কমপ্লেক্সে তো কাউয়া-বক থাকে। আপনি আমার বাংলোতে গেলেন না কেন? আমার বাংলো একটা অফিস। বাংলোতে যখন অ্যালাউ করব তখন ঢুকবেন।’


তিনি আরো বলেন, ‘আপনারা প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি হয়ে মনে করছেন আপনারা রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি হয়ে গেছেন। আমি আপনার ফোন ধরতে বাধ্য নই।’


ইউএনও আমিনুল এ-ও বলেন, ‘আমি প্রজাতন্ত্রের এমন চাকর মালিককে শাস্তিও দিতে পারি।’


এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন, ‘আমার কাছে এ ব্যাপারে কোনো তথ্য এখনো আসেনি। তথ্য পেলে মন্তব্য করতে পারব।